অপরাধ
জমি দখলকে কেন্দ্র করে হামলা- পুলিশ, নারী ও শিশুসহ আহত ৯, আটক ২

রাজধানী তুরাগের দিয়াবাড়ী এলাকার মেট্রোরেল উত্তর স্টেশন সংলগ্ন মোড়ল বাড়িতে জমি দখলকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ , নারী ও শিশুসহ অন্তত ৯ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় এক শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল (৫মে) সোমবার বিকেলে এই হামলার ঘটনা ঘটে। তুরাগ থানা পুলিশ ও দিয়াবাড়ি আর্মি ক্যাম্পের সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে হামলার সাথে জড়িত দুজনকে সেনাসদস্যরা
আটক করে তুরাগ থানা পুলিশে সোপর্দ করা করেন।
আহতরা হলেন তুরাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আজিজ আল মামুন, বাড়ির মালিক ইয়াকুব আলী (৭১), স্ত্রী শাহনাজ পারভীন (৫৫), ছোট ছেলে আহমেদ নাঈম (২০), তার স্ত্রী নাঈমা সুলতানা পিংকি (২৫), তাদের নয় মাস বয়সী কন্যা খাদিজা, চাচা আবুল কাশেম (৪২), মোস্তফা (৫০), ভাবি সায়মা কবীর তমা (২৭) এবং ভাড়াটিয়াদের শিশু সন্তান সালমান (৯)।
এসময় উক্ত ঘটনায় আহত বাড়ীর মালিকের ছোট ছেলে নাঈম বলেন, আমার বাবা ২০১২ সালে বাড়ির সামনে ১৮ কাঠা জমি বিক্রি করেন। যা আমরা কেউই অবগত ছিলামনা, হঠাৎ ২০২৩ সালে হঠাৎ একদল লোক জমিটি দখলে নিতে আসে। আমরা থানা পুলিশকে বিষয়টি জানালে সেখানে গিয়ে জানতে পারি, জমিটি এডিসন গ্রুপ নামে একটি কোম্পানি দেড় কোটি টাকায় কিনেছে। যেহেতু বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত ছিলাম না সেহেতু জমির বিপরীতে প্রয়োজনে আমরা আড়াই টাকা দিয়ে আমার ভিটাবাড়ির জমিটি ফেরত দিয়ে দিতে বলি। তাছাড়া কোনো নোটিশে, সাইনবোর্ড বা কোন কিছু আমরা না জানায় হঠাৎ তারা জমি দখল করতে আসায় তৎকালীন তুরাগ থানার ওসি মওদুদ স্যার উভয়কে আদালতে যেতে বলেন। আমরা বলেছিলাম, ঠিক আছে আমরা আদালতে যাবো এবং আদালতের রায়ও মেনে নেব। কিন্তু এডিসন গ্রুপের লোকজন হঠাৎ প্রায় ৫০/৬০ জন সন্ত্রাসী নিয়ে আমাদের বাড়িতে দেশীয় অস্ত্র সুসজ্জিত ও পাটকেল দিয়ে হামলা চালায়। পরে আমরা জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দেই। তারা পুলিশের উপস্থিতিতেই বাড়ির বাইরের সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে এবং ইট-পাটকেল এনে উপর্যপুরী হামলা চালায়। একপর্যায়ে আমরা কেসি গেট বন্ধ করে ঘরের ভেতরে ঢুকে যাই। কিন্তু তারা গেটের তালা ভেঙে আমাদের মা-বোন সহ এলোপাথাড়ি ভাবে সবার উপর হামলা করে। এতে রেহায় পায়না শিশুরাও। এমনকি এসআই মামুন স্যারও এতে আহত হন।’
মোড়ল পরিবারের বড় ছেলে মোহাম্মদ নবীন বলেন, আমরা এডিসন গ্রুপের চেয়ারম্যান আমিনুর রশিদ সাহেবের সঙ্গে বসে টাকা পরিশোধের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেছি। তিনিও রাজি ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ কি হল জানিনা, তারা আমাদের আওয়ামী লীগ তকমা লাগিয়ে হান্নান নামে তাদের এক ম্যানেজার ও কথিত মানবাধিকারকর্মী আরাফাত ইবনে নাসির সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হামলা চালায়। এর আগেও নাসির আমাদের কাছে মিমাংশার কথা বলে টাকা দাবি করে কিন্ত আমরা তাতে রাজি না হওয়ার কারনেই হামলাটি হয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে আটক হওয়া একজন এডিসন গ্রুপের ম্যানেজার হান্নান এবং এখনো অন্যজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। এদিকে থানার এসআই আজিজ আল-মামুন বলেন, ‘৯৯৯-এর ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলা প্রতিহতের চেষ্টা করি। এ সময় আমিও আঘাত পাই।’
তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাহাত খানকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি। পরে ওসি (তদন্ত) নুরুজ্জামানকে ফোন করলে তিনি মুঠোফোনে “পরিক্রমা” কে বলেন, গতকালের হামলার ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের নামে হামলা, ভাংচুর ও চাঁদাবাজি মামলা রজু করা হয়েছে।