আন্তর্জাতিক
ইসরায়েলকে অস্ত্র দিতে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ ফিরিয়ে দিল সৌদি আরব

ইরান ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সংঘাতের সময় যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবকে অনুরোধ করেছিল, ‘থাড’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে কিছু ইন্টারসেপ্টর ইসরায়েলকে সরবরাহ করতে। তবে সৌদি আরব সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন আলোচনায় যুক্ত দুই মার্কিন কর্মকর্তা।
মিডল ইস্ট আই জানিয়েছে, ইরানি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইসরায়েলের অস্ত্রভাণ্ডার সংকটে পড়লে যুক্তরাষ্ট্র উপসাগরীয় মিত্রদের দিকে তাকায়। বিশেষ করে, সৌদি আরবের নতুন কেনা ‘থাড’ ব্যাটারির সাহায্য চাওয়া হয়। কিন্তু সৌদি তখন নিজস্ব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েই ব্যস্ত ছিল।
এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, “যুদ্ধের সময় আমরা অনেককে অনুরোধ করেছিলাম, কেউ সাড়া দেয়নি। এমনকি কিছু লেনদেনের প্রস্তাবও দিয়েছিলাম।”
সংযুক্ত আরব আমিরাতকেও অনুরোধ করা হয়েছিল, কিন্তু তারা ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এমন সময়ে পেন্টাগনের পরিকল্পনায় থাকা প্যাট্রিয়ট ইন্টারসেপ্টরের মাত্র ২৫ শতাংশ মজুত ছিল। ফলে যুক্তরাষ্ট্র নিজস্ব জাহাজ থেকে স্ট্যান্ডার্ড মিসাইল-৩ ছুড়ে ইসরায়েলকে রক্ষা করতে বাধ্য হয়।
বিশ্লেষক ডগলাস বার্কি বলেন, “এই ধরণের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে অস্ত্র মজুতের স্বল্পতা।” ইরান অন্তত পাঁচটি সামরিক স্থাপনায় সরাসরি হামলা চালাতে সক্ষম হয়—যা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট করে।
এ ঘটনায় সৌদি আরবের অনড় অবস্থান ওয়াশিংটনের জন্য বিব্রতকর। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরক্ষা জোট গঠন করতে চাচ্ছিল, যেখানে ইসরায়েল ও উপসাগরীয় দেশগুলোকে একত্র করার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু গাজা, পশ্চিম তীর, লেবানন ও সিরিয়ায় ইসরায়েলের লাগামহীন আগ্রাসন এসব আরব দেশকে বিরূপ করে তুলেছে।
ইউরেশিয়া গ্রুপের ফিরাস মাকসাদ বলেন, “সৌদি আরব এখন তুরস্কের দিকেও ঝুঁকছে, এমনকি ইরানের সঙ্গেও সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে।”
মধ্যপ্রাচ্যের এক কূটনীতিক বলেন, “আমাদের দৃষ্টিতে এই যুদ্ধের ফল আমাদের অনুকূলে। কারণ ইসরায়েল বুঝেছে, একটি শক্তিশালী দেশের সঙ্গে সংঘর্ষ কতটা ভয়াবহ হতে পারে।”