আন্তর্জাতিক
ইরান ইস্যুতে পুতিনকে ঘিরে প্রতিবেদন অপপ্রচার বলল রাশিয়া

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব অনুসারে তেহরানকে ‘শূন্য সমৃদ্ধকরণ’ চুক্তি মেনে চলতে উৎসাহ দিয়েছেন—মার্কিন সংবাদমাধ্যমে এমন খবরকে সরাসরি অপপ্রচার বলে প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়া।
রবিবার রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, “এই প্রতিবেদনের কোনো ভিত্তি নেই। এটি ইরান ইস্যুতে নতুন রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে চালানো অপপ্রচারের অংশ।”
মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস শনিবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনটি সূত্রের বরাতে বলা হয়—পুতিন ইরানকে উৎসাহ দিয়েছেন এমন একটি চুক্তিতে যেতে যাতে তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ রাখে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতায় আসে।
এ নিয়ে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “আমরা সবসময় জোর দিয়ে বলে আসছি, ইরান ইস্যুর সমাধান একমাত্র কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়াতেই সম্ভব। আমরা একটি পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য সমাধানের জন্য কাজ করতে প্রস্তুত।”
উল্লেখ্য, ইরানের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমা বিশ্ব ও ইসরায়েল অভিযোগ করে আসছে যে, দেশটি গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। যদিও ইরান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে এবং বলছে—তাদের বেসামরিক পরমাণু কর্মসূচি গড়ার অধিকার রয়েছে।
রাশিয়া বরাবরই ইরানের বেসামরিক পরমাণু প্রযুক্তির অধিকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং তেহরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। তবে জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ইরানের ওপর বিমান হামলার সময় মস্কো সরাসরি তেহরানের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেয়নি।
১৩ জুন ইসরায়েল নজিরবিহীন হামলা চালায় ইরানে, যার ফলে ১২ দিনব্যাপী একটি যুদ্ধ শুরু হয় এবং যার প্রভাবে স্থগিত হয়ে যায় তেহরান-ওয়াশিংটনের মধ্যকার গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু আলোচনা। এরপর ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিভিন্ন পরমাণু স্থাপনায় বোমাবর্ষণ করে, যার মধ্যে ছিল ফোরদোর ভূগর্ভস্থ কেন্দ্র, ইসফাহান ও নাতাঞ্জের স্থাপনাগুলো।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়া নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেছে, ইরানকে ঘিরে যেকোনো সামরিক উত্তেজনা বন্ধ করে কূটনৈতিক পথে ফিরে আসাই একমাত্র সমাধান।