বাংলাদেশ
সাংবাদিক তুহিন হত্যা: কেটু মিজানসহ ৭ আসামি রিমান্ডে

গাজীপুরে প্রকাশ্যে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় পুলিশ ও র্যাবের অভিযানে মোট সাতজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত ‘কেটু মিজান’ও রয়েছেন। শনিবার (৯ আগস্ট) গাজীপুর অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আলমগীর আল মামুন তাদের প্রত্যেকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
আদালতে শুনানি
আদালত সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে বিচারক শুনানি শেষে ৭ আসামির প্রত্যেকের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে প্রিজনভ্যানে করে আসামিদের আদালতে আনা হয়। গাজীপুর মেট্রোপলিটন আদালতের পরিদর্শক আহসান উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার অভিযান
শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে পুলিশ গাজীপুর নগরীর সদর থানার সালনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে কেটু মিজান, তার স্ত্রীসহ মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করে। অন্যদিকে, শনিবার (৯ আগস্ট) বিকেলে র্যাব কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা থেকে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত স্বাধীন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে পুলিশ আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে। এ নিয়ে মোট সাতজন গ্রেপ্তার হলেন।
সিসিটিভি ফুটেজ ও হত্যার কারণ
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার ড. মো. নাজমুল করিম খান একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি আটজনের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। তিনি বলেন, ‘গোলাপীর হানিট্রাপে’ পড়ে ব্যাংক থেকে টাকা তোলা নিয়ে বাদশা নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে নারীর বাগবিতণ্ডা হয়। সাংবাদিক তুহিন সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করলে আসামিরা তাকে বাধা দেয়। ভিডিও মুছে না ফেলায় আসামিরা তুহিনকে কুপিয়ে হত্যা করে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে স্বাধীন র্যাবের কাছে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি জানান, কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে বাদশা ওই নারীকে থাপ্পড় মারলে স্বাধীনসহ অন্যরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। তুহিন সেই দৃশ্য ভিডিও করতে থাকলে তাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় তারা।
পুলিশের ব্যর্থতা নিয়ে জিএমপি কমিশনারের বক্তব্য
জিএমপি কমিশনার এই ঘটনায় পুলিশের কিছু ব্যর্থতা রয়েছে বলে স্বীকার করেন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারার জন্য সাংবাদিক কমিউনিটির কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যের স্বল্পতার কারণে গাজীপুরে অপরাধ দমন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। একইসঙ্গে তিনি নিহত সাংবাদিক তুহিনের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।