আন্তর্জাতিক
ইউরেনিয়াম শর্তে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবে না ইরান

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বন্ধের শর্ত দিলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন কোনো পরমাণু আলোচনা করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে তেহরান। সোমবার বার্তাসংস্থা এএফপি এই তথ্য জানায়।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উপদেষ্টা আলি বেলায়েতি রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম ইরনাকে বলেন, “সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বন্ধের শর্তে কোনো আলোচনা হবে না। ইরান শান্তিপূর্ণ কাজে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের অধিকার থেকে সরে আসবে না।”
এর আগে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকাই জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন আলোচনার দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তিনি বলেন, “কবে, কোথায় এবং কখন বৈঠক হবে, তা এখনো নির্ধারিত হয়নি।” আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত রয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ।
চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ওমানের মধ্যস্থতায় ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পাঁচ দফা বৈঠক করলেও কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর এটি ছিল সর্বোচ্চ পর্যায়ের আলোচনা।
তবে গত ১৩ জুন ইসরাইলের ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনায় হামলার পর ষষ্ঠ দফার বৈঠক বাতিল হয়ে যায়। ইরানের দাবি, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রও সীমিতভাবে যুক্ত ছিল, যা শান্তিপূর্ণ আলোচনার পথ রুদ্ধ করেছে।
এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এক বিবৃতিতে বলেন, “ইরান সবসময় কূটনীতি ও গঠনমূলক আলোচনাকে সমর্থন করে। আমরা বিশ্বাস করি, শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ এখনো খোলা রয়েছে।”
ইসরাইল ও পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, ইরান গোপনে পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে। তবে ইরান জোর দিয়ে দাবি করেছে, তারা শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করছে।
বিশ্বের একমাত্র দেশ হিসেবে ইরান এখনো পরমাণু অস্ত্র না থাকলেও ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছে। যদিও পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য ৯০ শতাংশের বেশি সমৃদ্ধকরণ প্রয়োজন। জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ জানিয়েছে, ইরান তাদের ইউরেনিয়াম মজুত অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহার করছে—এমন কোনো প্রমাণ তাদের কাছে নেই।