ইসলাম
‘ফজিলত’ বলতে কী বোঝায়? জানুন ইসলামের দৃষ্টিতে

আমরা প্রায়ই বক্তব্য বা ধর্মীয় আলোচনায় শুনে থাকি, ‘এ কাজের ফজিলত বেশি’ কিংবা ‘অমুক আমলের এমন এমন ফজিলত’। কিন্তু এই ‘ফজিলত’ শব্দের অর্থ কী?
‘ফজিলত’ শব্দটি এসেছে আরবি ‘ফজল’ শব্দ থেকে, যার মানে অতিরিক্ত মর্যাদা বা বাড়তি গুণ। সাধারণত এটি ভালো গুণ, চরিত্র, আচরণ ও জীবনযাপনের উৎকর্ষ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
ইসলামের দৃষ্টিতে ‘ফজিলত’ এমন এক গুণ, যা জীবনের সব ক্ষেত্রে ভারসাম্য ও উৎকর্ষ এনে দেয়। শিরাজীর মতে, ফজিলত হলো অতিরিক্ততা ও ঘাটতির মাঝামাঝি অবস্থান। যেমন সাহস একটি ফজিলত, কিন্তু অতিরিক্ত সাহস বেপরোয়া আর কম হলে ভীতুতা।
হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সর্বোত্তম কাজ হলো মধ্যম পন্থা।’ (সুনান বায়হাকি, হাদিস: ৬৪৩৫)
ইসলামে ফজিলতের গুরুত্ব:
ইসলামে ফজিলত শুধু ভালো গুণ নয়, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের একটি উপায়। যেমন সততা, ধৈর্য, উদারতা, জ্ঞানার্জন ইত্যাদি ফজিলতের কাজ।
আজানের দোয়ায়ও বলা হয়, ‘আতি মুহাম্মাদিনিল ওয়াসিলাহ ওয়াল ফজিলাহ।’ অর্থাৎ নবী (সা.)–এর জন্য ফজিলত তথা সর্বোচ্চ মর্যাদা কামনা করা।
ফজিলতের প্রকারভেদ:
রাগিব ইসফাহানি ফজিলতকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন—
১️⃣ জাতিগত উৎকর্ষ
২️⃣ প্রকারভেদে উৎকর্ষ
৩️⃣ ব্যক্তিগত উৎকর্ষ (নিজের প্রচেষ্টায় অর্জিত)
কেন ফজিলতের কথা বলা হয়:
কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যারা ইমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহান প্রতিদান।’ (সুরা ফাতির, আয়াত: ৭)
অর্থাৎ ফজিলত আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতার পথ দেখায়।
ফজিলত শুধু ভালো মানুষ হওয়া নয়, বরং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ভারসাম্য ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম।