অপরাধ
বরিশালে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতাকে হত্যা

বরিশালের কাশিপুরে পারিবারিক বিরোধের জেরে এক রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বরিশাল মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন সিকদার লিটু (৪২)। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় তাকে পুলিশের উপস্থিতি থেকে ছিনিয়ে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন নিহতের ছোট ভাই সুমন সিকদার (৩৫), বোন মুন্নি বেগম (৩৮) ও তাদের বৃদ্ধা মা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা লিটুকে উপর্যুপরি কোপ দিয়ে তার একটি হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাকে বাঁচাতে গেলে তাদেরও কুপিয়ে-পিটিয়ে আহত করা হয়।
নিহতের পরিবারের ভাষ্যমতে, পারিবারিক কলহের সূত্রপাত হয় লিটুর বোন মুন্নি বেগমের স্বামী জাকির হোসেন গাজীর গোপন দ্বিতীয় বিয়েকে ঘিরে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মামলা-মোকদ্দমা হয়। বৃহস্পতিবার আদালত থেকে জামিন পেয়ে মুন্নি ও তার ভাইয়েরা বাড়ি ফিরলে জাকিরের লোকজন পুলিশের সামনেই বিক্ষোভ করে এবং পুলিশ চলে যাওয়ার পর পুনরায় হামলা চালায়।
লিটুকে বাড়ি থেকে টেনে বের করে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এমনকি লাশ নেওয়ার সময় পুলিশের গাড়ি থামিয়ে আবারও কুপিয়ে ফেলে যায় হামলাকারীরা।
স্থানীয়দের অনেকে জানান, লিটন সিকদারের বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধমূলক অভিযোগ ছিল। চাঁদাবাজি, মারধর ও নারী সংক্রান্ত অভিযোগ ছাড়াও কিছুদিন আগে নিজের ভগ্নিপতিকে বিদ্যুৎ শক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে, যা এলাকায় ক্ষোভের জন্ম দেয়।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকলেও তারা কোনো কার্যকর ভূমিকা নেয়নি। বরং পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে এলাকা ত্যাগ করে, এবং পরে দুই ঘণ্টা পর ফিরে আসে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (উত্তর) মো. রিয়াদ হোসেন জানান, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে এবং মামলা প্রক্রিয়াধীন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে রয়েছে।