বাংলাদেশ
যুক্তরাজ্যে তড়িঘড়ি করে সম্পত্তি বিক্রি করে দিচ্ছেন আ.লীগ নেতারা

যুক্তরাজ্যে তড়িঘড়ি করে সম্পত্তি বিক্রি করে দিচ্ছেন বাংলাদেশের সাবেক ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই দেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ ও সম্পত্তির তদন্ত শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ধারণা করা হচ্ছে, এই অর্থের একটি বড় অংশ পাচার হয়েছে যুক্তরাজ্যে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল-এর এক যৌথ অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শেখ হাসিনার আস্থাভাজন ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এবং আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যুক্তরাজ্যের অভিজাত এলাকায় থাকা বিলাসবহুল বাড়িঘর দ্রুত বিক্রি, হস্তান্তর ও রিফাইন্যান্স করছেন।
২০২৪ সালের মে মাসে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (NCA) প্রায় ১ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকা মূল্যের অ্যাপার্টমেন্ট জব্দ করে, যেটির মালিক ছিলেন সালমান এফ রহমানের ছেলে ও ভাতিজা। একইভাবে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নামে থাকা প্রায় ২ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকার ৩০০টির বেশি সম্পত্তিও জব্দ হয়।
বসুন্ধরা গ্রুপ, বেক্সিমকো, সাইফ পাওয়ারসহ আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মালিক ও সংশ্লিষ্টরা নাইটসব্রিজ, ভার্জিনিয়া ওয়াটার ও গ্রোসভেনর স্কয়ারের মতো অভিজাত এলাকায় সম্পত্তি বিক্রি করছেন। এসব লেনদেনের বেশিরভাগই গোপন মালিকানাধীন কোম্পানির মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুর্নীতি দমন কমিশন যুক্তরাজ্য সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এসব সম্পত্তি যেন বিক্রি, স্থানান্তর বা বন্ধক না রাখা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনা শুধু বাংলাদেশের নয়, বরং আন্তর্জাতিক দুর্নীতির বিরুদ্ধেও এক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। লন্ডন যেন দুর্নীতিগ্রস্ত অর্থের নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত না হয়, তা নিশ্চিত করতে তৎপর হতে হবে।