Connect with us

অপরাধ

হেলাল আকবর ও ফজলে করিমের রেলওয়ে টেন্ডার সংক্রান্ত সম্পৃক্ততা

Published

on

চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ  চট্টগ্রামের যুবলীগ নেতা শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসী হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের সাথে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা রাউজানের সাবেক এমপি ফজলে করিমের রেলওয়ের টেন্ডার সংক্রান্ত সম্পৃক্ততা।

চট্টগ্রামের প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের টেন্ডার সম্রাট হিসেবে  পরিচিত এ নেতার বছরে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার টেন্ডার-বাণিজ্য ছিল একক আধিপত্য। তার অনুমতি ছাড়া টেন্ডার দিতে পারত না খোদ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও। একই সঙ্গে অপরাধ জগতেও ছিল তার শীর্ষ সন্ত্রাসীর তকমা।

খুন, মাদক, চাঁদাবাজি ও নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলাসহ অপরাধের সব বিভাগে ছিল সমান বিচরণ। জানা যায়, টেন্ডার আর অপরাধম‚লক কাজের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে গড়ে তোলেন একটি বাহিনী। এই বাহিনীর সদস্যদের বড় একটি অংশ কিশোর গ্যাং হিসাবে নগরজুড়ে দাপিয়ে বেড়াত। রেলওয়ের প্রধান কার্যালয় সিআরবি ও পাহাড়তলীতে অবস্থিাত ওয়ার্কশপ, বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার ও প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক অফিসে নজরদারির জন্য ছিল পৃথক টিম। বেশিরভাগ টেন্ডার বাগানোর কাজ বাহিনীর লোকজন দিয়েই করতেন।

ঝামেলা হলে নিজে গিয়ে উপস্থিত হতেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দপ্তরে। সঙ্গে থাকত ব্যক্তিগত বাহিনীর সদস্যদের বহনকাজে যুক্ত ৮/১০ মাইক্রোবাসের বহর। গাড়ি থেকে নেমে দ্রতই ঢুকে পড়তেন কর্মকর্তার দপ্তরে। চারপাশ ঘিরে থাকতেন বিশাল বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় জরুরী কাজে যাওয়া লোকজন কর্মকর্তার রুমের ভেতরে ঢোকার কোনো সুযোগই পেতেন না। অসহায়

কর্মকর্তাকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করতেন বাবর। এ সময় কর্মকর্তার কক্ষে যাওয়া আসা করতেন বহরের সদস্যরা। স্রেফ ভয়ভীতি দেখাতে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের কোনো কর্মকর্তার দপ্তরে গেলেই দলবল নিয়ে যেতেন।

বাবর রেলওয়ের দপ্তরে গেলেই খবর দ্রত ছড়িয়ে পড়ত সব দপ্তরে। কোনো ধরনের আগাম এপয়েন্টমেন্ট না নিয়েই হুটহাট এসে পড়তেন বাবর ও তার দলবল।রেলওয়ের টেন্ডারবাজি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি কর্মকর্তাদের বদলি নিয়োগ-বাণিজ্যকে বাংলো বরাদ্দের নেপথ্যে ছিল বাবরের প্রভাব। বাবর কর্তৃক টেন্ডার বাগিয়ে নিলেও রেলওয়ের বেশিরভাগ কর্মকর্তা নিজেদের অসহায়ত্বের কথা তুলে

ধরতেন। আবার বাবরকে ব্যবহার করে নিজের মতো করে টেন্ডার পাইয়ে কমিশন-বাণিজ্যে যুক্ত ছিল কর্মকর্তাদেরই একটি চক্র। প‚র্বাঞ্চলের ১২ বিভাগের মধ্যে প্রকৌশল ও সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের দপ্তরেই টেন্ডার বেশি হতো। বছরে দুই বিভাগে অন্তত ২৫০ কোটি টাকার টেন্ডার হতো। বাকি প্রতিটি বিভাগে গড়ে ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকার টেন্ডার হতো।

সব মিলে প‚র্বাঞ্চলে বছরে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার টেন্ডার হতো। বাবর নিজের নামে বা নিজের প্রতিষ্ঠানের নামে কখনো টেন্ডার জমা দিতেন না। ভিন্ন নামে আত্মীয়স্বজন এবং পরিচিত ঠিকাদারের নামে টেন্ডার জমা দিতেন। বাবরকে এড়িয়ে প‚র্বাঞ্চলের পাঁচ শতাধিক ঠিকাদারের কারও পক্ষে টেন্ডার জমা দেওয়া সম্ভব ছিল না।

১ লাখ টাকা থেকে ২০০ কোটির টেন্ডার-সবই নিয়ন্ত্রণ করতেন বাবর। কেউ বাবরকে এড়িয়ে টেন্ডার জমা দিলে রীতিমতো ধরে নিয়ে আসা হতো। টেলিফোনে হুমকি ধমকি তো ছিলই।রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের সরঞ্জাম কেনার টেন্ডার থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর পোশাক সেলাই করা কোনো ধরনের টেন্ডার কাজ বাবরকে এড়িয়ে করা যেত না। বাবরকে টেন্ডার পাইয়ে দিতে সহায়তায় মেতে উঠেছিল। তাই বাবরের

সম্মতি ছাড়া বা তার সমর্থিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কেউ টেন্ডারে অংশ নিতে পারতেন না। অভিনব উপায় অবলম্বন করতেন টেন্ডার বাগাতে। নিজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্য নামের প্রতিষ্ঠান দিয়েও নিয়ন্ত্রণ করতেন টেন্ডার। শাহ আলম নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে টেন্ডার-বাণিজ্য নিয়ে তার ছিল গভীর সখ্য। শাহ আলমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম এসএ করপোরেশন ও ইউনিক ট্রেডার্স। গত ১৮ বছর এই প্রতিষ্ঠান রেলওয়ের টেন্ডারের বড়অংশের কাজ পেয়েছে। নেপথ্যে বাবর এই প্রতিষ্ঠানকে কাজ পেতে সহযোগিতা করেছেন। নিজের পছন্দের প্রতিষ্ঠান নিয়ে একচ্ছত্র টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে আরেক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে টেন্ডার বাগাতেন। ঘুরেফিরে টেন্ডারের আয় বাবরই করতেন।

টেন্ডার-বাণিজ্য করেই শতকোটি টাকার মালিক বাবর। টেন্ডারবাজির টাকায় গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদ। নগরীর নন্দনকানন বৌদ্ধমন্দির রোডে রয়েছে তার পাঁচ তলা আলিশান বাড়ি। ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ডি-ব্লকের ২ নম্বর রোডে ২৩/১ নম্বরের বাড়ির চার তলায় রয়েছে ফ্ল্যাট। ঢাকার বনানীতে দুটি সাত তলা বাড়ি। নন্দনকানন ২ নম্বর গলিতে তার স্ত্রীর নামে ৩ হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট এবং স্টেশন রোডে একটি বার।

টেন্ডারবাজি করতে গিয়ে অপরাধম‚লক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। থানায় তার নামে আছে অসংখ্য খুনেরমামলা। অপরাধ জগতে তার শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসাবেও পরিচিতি আছে। চট্টগ্রামের এমইএস কলেজভিত্তিক ছাত্রলীগেররাজনীতি করতেন বাবর। তিনি এ কলেজছাত্র সংসদের জিএস ছিলেন। ছাত্রলীগ-যুবলীগের একটি অংশকে নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে জড়িয়ে ছিলেন নগরকেন্দ্রিক অপরাধম‚লক কর্মকান্ড। আছে কয়েকডজন হত্যাকান্ডের অভিযোগ।

এসবের মধ্যে আছে চট্টগ্রাম সিটি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা আশিককে হত্যা, রাউজানের আকবর-মুরাদ হত্যা,বিএনপিকর্মী আজাদ হত্যা, মির্জালেনে ডাবল মার্ডার, তামাকুন্ডী লেনে রাসেল হত্যা, ফরিদ হত্যা। প্রতিটি হত্যাকান্ডের জন্য বাবরকে প্রধান আসামি করে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা আছে। ২০১৩ সালের ২৪ জুন টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে সিআরবিতে বাবর বাহিনীর হাতে শিশু আরমান ও সাজু পালিত নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হন।

ওই দিনদুপুরে সংগঠিত ডাবল মার্ডারের এ ঘটনা দেশজুড়ে আলোচিত হয়। খুনের ঘটনার পর সাজু পালিতের মা থানায় হত্যা মামলা করেন। সেই মামলার আসামি হিসাবে রয়েছে বাবরের নাম। মধ্যপ্রাচ্যের দুবাই কেন্দ্রিক একটি সিন্ডিকেটও পরিচালনা করতেন। তিনি একটি মামলায় চট্টগ্রাম কারাগারে ছিলেন দীর্ঘদিন। ২০১১ সালে জেল থেকে বের হয়ে পাড়ি জমান দুবাইতে। সেখান থেকে দেশে ফেরেন ২০১২ সালে। এরপর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন দলীয় পদ পেতে। ব্যয় করেন প্রচুর টাকাও। এরপর যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যপদ পান।

পদ পাওয়ার পরই রেলের টেন্ডারবাজিতে আরও প্রভাব বিস্তার শুরু করেন।রেলওয়ের অঘোষিত সম্রাট হিসেবে পরিচিত বাবরের মূল অভিভাবক হিসেবে ফজলে করিম চৌধুরীর ছিলেন মর্মে জনশ্রুতি রয়েছে। ফজলে করিম চৌধুরী গত কয়েকটি সংসদে রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ে সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন।জুলাই-আগস্ট হত্যাকান্ডে বাবরের সম্পৃক্ততা।নগরের মুরাদপুর এলাকায় (১৬ জুলাই) গুলিতে ওয়াসিম, ফারুক, শান্ত নামীয় তিনি জন মৃত্যুবরণ করেন। এছাড়া১৮ জুলাই বহদ্দারহাট এলাকায় গুলিতে মৃত্যুবরণ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্রতড়ুয়া, সাইমনমাহিন, তানভীর সিদ্দিকি ও ফজলে রাব্বি। উক্ত ঘটনার একাধিক ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া ব্যাপক সংবাদ প্রচার হয়। প্রকাশ্য দিবালকে ঘটনা সংগঠিত হওয়ায় পথচারি, আন্দোলনকারী, বিভিন্নমিডিয়ার সাংবাদিক পুরো ঘটনার ভিডিও করে। ভিডিওতে দেখা যায়, ১৬ জুলাই পিস্তল হাতে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাবেক উপ-অর্থ সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর। এছাড়া কাটা বন্দুক হাতে ছিলেন যুবলীগ নেতা ফিরোজ। শটগান হাতে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সংগঠক মোঃ দেলোয়ার। পিস্তল হাতে দেখা যায় যুবলীগ কর্মী এন এইচ মিঠু ও মো. জাফর। ১৮ জুলাই পিস্তল হাতে দেখা যায় চান্দগাঁও থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি মহিউদ্দিন ফরহাদ, যুবলীগ কর্মী মোঃ জালাল ওরফে ড্রিল জালাল ও মো. মিজানকে। শটগান হাতে ছিলেন যুবলীগ কর্মী মোঃ তৌহিদ।

এদিকে গত ৪ আগস্ট নগরের নিউমার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগের সংঘর্ষে প্রকাশ্যে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বেশি দেখা যায়। ঐদিন নগরের কোতোয়ালি থানার নিউমার্কেট ও আসকারদিঘির পাড় এলাকায় ১০ জন অস্ত্রধারীকে দেখা গেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিটি কলেজ রোডের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ের পেছন থেকে রিভলবার হাতে গুলি ছোড়েন হেলমেট পরা এক যুবক। তাঁর পাশে থাকা আরেকজন ককটেল নিক্ষেপ করেন। গত ৪ আগস্ট ২০২৪ইং নগরের জামালখান ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের নেতৃত্বে বেলা ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে নগরের আসকারদিঘির পাড় এলাকায় আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দিতে দেখা গেছে। ওই সময় তাঁর পাশে থাকা এক যুবককে শটগান হাতে দেখা যায়।

ভিডিওতে দেখা যায়, কাউন্সিলর ওই যুবককে সামনে এগোতে নির্দেশ দিচ্ছেন। এরপর বেশ কয়েকটি গুলি ছোড়ার শব্দ শোনা যায়। ধাওয়া খেয়ে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে জামালখান ও সার্সন রোডের দিকে চলে যান। শটগান হাতে থাকা যুবকের নাম ফরহাদুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে রিন্টু। রিন্টু ফজলে করিমের অনুসারী ও রাউজানের বাসিন্দা। নগরের লাভলেইন এলাকায় রিন্টু থাকতেন। তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাবেক উপসমাজসেবা সম্পাদক। চট্টগ্রামের স্থানীয় লোকজন জুলাই আগস্ট হত্যাকান্ডে ছাত্রদের বিরুদ্ধে অস্ত্রের ব্যবহারেরবিষয়ে মূলত বাবর বাহিনী জড়িত ছিলো মর্মে জানায়।

উক্ত বাবরের গ্রামের বাড়ি রাউজান। রেলওয়ে ঠিকাধারীতে এককচ্ছত্র নিয়ন্ত্রনে বাবরকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে ফজলে করিম চৌধুরীকে দায়ী করা হয়। উক্ত ঘটনায় রুজুকৃত একাধিক মামলায় ফজলে করিম চৌধুরীকে এজাহারে আসামী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ফজলে করিম গ্রেফতার হওয়ার পর উক্ত মামলা সমূহে গ্রেফতার এবং রিমান্ডে আনা হয়েছে। মামলাগুলি তদন্তাধীন আছে।

কোটা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ২০২৪ ফজলে করিমের ভ‚মিকা:-রাউজানের সংসদ সদস্য হলেও পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক বিভিন্ন কারনে চট্টগ্রাম মহানগরসহ পুরো চট্টগ্রামজেলায় ফজলে করিম চৌধুরীর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনের পর বর্তমানে তিনি এই অঞ্চলের আওয়ামী লীগের অভিভাবক হিসেবে বিবেচিত হন। এছাড়া সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী নিকট-আত্মীয় হওয়ায় চট্টগ্রাম মহানগরে আওয়ামীলীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচনসহ সার্বিকসার্বিক বিষয়ে তিনি অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে ভ‚মিকা পালন করতেন মর্মেজানা যায়। তার পাথরঘাটা বাসভবণ থেকে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করতেন। চট্টগ্রামের শীর্ষস্থানীয় সাংসদ, নেতা-কর্মীরা তার পাথরঘাটা বাসায় নিয়মিত আসা যাওয়া করতেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তার বাসা থেকে তার ছেলে ফারাজ করিমের নেতৃত্বে অস্ত্র সরবরাহ করা হয়। রাউজানের সন্ত্রাসীরা মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, নিউমার্কেট সহ আশেপাশে এলাকায় অস্ত্রসহ ছাত্র-জনতার উপর হামলা করে। তার ও তার ছেলের নেতৃত্বে এ হত্যাকান্ডগুলো পরিচালিত হয়।

চট্টগ্রাম শহরের রাজনীতির মাফিয়া ডন হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর চট্টগ্রামে অন্যতম শীর্ষ অস্ত্রধারী ক্যাডার হিসেবে গত ১৬ বছর বিভিন্ন দপ্তরে ঠিকাধারী নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন। হেলাল আকবর চৌধুরীর সাথে অস্ত্র সরবরাহ কাজে তার বাসায় পরিকল্পনা করে থাকেন।

Share

চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ  চট্টগ্রামের যুবলীগ নেতা শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসী হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের সাথে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা রাউজানের সাবেক এমপি ফজলে করিমের রেলওয়ের টেন্ডার সংক্রান্ত সম্পৃক্ততা।

চট্টগ্রামের প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের টেন্ডার সম্রাট হিসেবে  পরিচিত এ নেতার বছরে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার টেন্ডার-বাণিজ্য ছিল একক আধিপত্য। তার অনুমতি ছাড়া টেন্ডার দিতে পারত না খোদ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও। একই সঙ্গে অপরাধ জগতেও ছিল তার শীর্ষ সন্ত্রাসীর তকমা।

খুন, মাদক, চাঁদাবাজি ও নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলাসহ অপরাধের সব বিভাগে ছিল সমান বিচরণ। জানা যায়, টেন্ডার আর অপরাধম‚লক কাজের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে গড়ে তোলেন একটি বাহিনী। এই বাহিনীর সদস্যদের বড় একটি অংশ কিশোর গ্যাং হিসাবে নগরজুড়ে দাপিয়ে বেড়াত। রেলওয়ের প্রধান কার্যালয় সিআরবি ও পাহাড়তলীতে অবস্থিাত ওয়ার্কশপ, বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার ও প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক অফিসে নজরদারির জন্য ছিল পৃথক টিম। বেশিরভাগ টেন্ডার বাগানোর কাজ বাহিনীর লোকজন দিয়েই করতেন।

ঝামেলা হলে নিজে গিয়ে উপস্থিত হতেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দপ্তরে। সঙ্গে থাকত ব্যক্তিগত বাহিনীর সদস্যদের বহনকাজে যুক্ত ৮/১০ মাইক্রোবাসের বহর। গাড়ি থেকে নেমে দ্রতই ঢুকে পড়তেন কর্মকর্তার দপ্তরে। চারপাশ ঘিরে থাকতেন বিশাল বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় জরুরী কাজে যাওয়া লোকজন কর্মকর্তার রুমের ভেতরে ঢোকার কোনো সুযোগই পেতেন না। অসহায়

কর্মকর্তাকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করতেন বাবর। এ সময় কর্মকর্তার কক্ষে যাওয়া আসা করতেন বহরের সদস্যরা। স্রেফ ভয়ভীতি দেখাতে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের কোনো কর্মকর্তার দপ্তরে গেলেই দলবল নিয়ে যেতেন।

বাবর রেলওয়ের দপ্তরে গেলেই খবর দ্রত ছড়িয়ে পড়ত সব দপ্তরে। কোনো ধরনের আগাম এপয়েন্টমেন্ট না নিয়েই হুটহাট এসে পড়তেন বাবর ও তার দলবল।রেলওয়ের টেন্ডারবাজি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি কর্মকর্তাদের বদলি নিয়োগ-বাণিজ্যকে বাংলো বরাদ্দের নেপথ্যে ছিল বাবরের প্রভাব। বাবর কর্তৃক টেন্ডার বাগিয়ে নিলেও রেলওয়ের বেশিরভাগ কর্মকর্তা নিজেদের অসহায়ত্বের কথা তুলে

ধরতেন। আবার বাবরকে ব্যবহার করে নিজের মতো করে টেন্ডার পাইয়ে কমিশন-বাণিজ্যে যুক্ত ছিল কর্মকর্তাদেরই একটি চক্র। প‚র্বাঞ্চলের ১২ বিভাগের মধ্যে প্রকৌশল ও সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের দপ্তরেই টেন্ডার বেশি হতো। বছরে দুই বিভাগে অন্তত ২৫০ কোটি টাকার টেন্ডার হতো। বাকি প্রতিটি বিভাগে গড়ে ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকার টেন্ডার হতো।

সব মিলে প‚র্বাঞ্চলে বছরে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার টেন্ডার হতো। বাবর নিজের নামে বা নিজের প্রতিষ্ঠানের নামে কখনো টেন্ডার জমা দিতেন না। ভিন্ন নামে আত্মীয়স্বজন এবং পরিচিত ঠিকাদারের নামে টেন্ডার জমা দিতেন। বাবরকে এড়িয়ে প‚র্বাঞ্চলের পাঁচ শতাধিক ঠিকাদারের কারও পক্ষে টেন্ডার জমা দেওয়া সম্ভব ছিল না।

১ লাখ টাকা থেকে ২০০ কোটির টেন্ডার-সবই নিয়ন্ত্রণ করতেন বাবর। কেউ বাবরকে এড়িয়ে টেন্ডার জমা দিলে রীতিমতো ধরে নিয়ে আসা হতো। টেলিফোনে হুমকি ধমকি তো ছিলই।রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের সরঞ্জাম কেনার টেন্ডার থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর পোশাক সেলাই করা কোনো ধরনের টেন্ডার কাজ বাবরকে এড়িয়ে করা যেত না। বাবরকে টেন্ডার পাইয়ে দিতে সহায়তায় মেতে উঠেছিল। তাই বাবরের

সম্মতি ছাড়া বা তার সমর্থিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কেউ টেন্ডারে অংশ নিতে পারতেন না। অভিনব উপায় অবলম্বন করতেন টেন্ডার বাগাতে। নিজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্য নামের প্রতিষ্ঠান দিয়েও নিয়ন্ত্রণ করতেন টেন্ডার। শাহ আলম নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে টেন্ডার-বাণিজ্য নিয়ে তার ছিল গভীর সখ্য। শাহ আলমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম এসএ করপোরেশন ও ইউনিক ট্রেডার্স। গত ১৮ বছর এই প্রতিষ্ঠান রেলওয়ের টেন্ডারের বড়অংশের কাজ পেয়েছে। নেপথ্যে বাবর এই প্রতিষ্ঠানকে কাজ পেতে সহযোগিতা করেছেন। নিজের পছন্দের প্রতিষ্ঠান নিয়ে একচ্ছত্র টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে আরেক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে টেন্ডার বাগাতেন। ঘুরেফিরে টেন্ডারের আয় বাবরই করতেন।

টেন্ডার-বাণিজ্য করেই শতকোটি টাকার মালিক বাবর। টেন্ডারবাজির টাকায় গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদ। নগরীর নন্দনকানন বৌদ্ধমন্দির রোডে রয়েছে তার পাঁচ তলা আলিশান বাড়ি। ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ডি-ব্লকের ২ নম্বর রোডে ২৩/১ নম্বরের বাড়ির চার তলায় রয়েছে ফ্ল্যাট। ঢাকার বনানীতে দুটি সাত তলা বাড়ি। নন্দনকানন ২ নম্বর গলিতে তার স্ত্রীর নামে ৩ হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট এবং স্টেশন রোডে একটি বার।

টেন্ডারবাজি করতে গিয়ে অপরাধম‚লক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। থানায় তার নামে আছে অসংখ্য খুনেরমামলা। অপরাধ জগতে তার শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসাবেও পরিচিতি আছে। চট্টগ্রামের এমইএস কলেজভিত্তিক ছাত্রলীগেররাজনীতি করতেন বাবর। তিনি এ কলেজছাত্র সংসদের জিএস ছিলেন। ছাত্রলীগ-যুবলীগের একটি অংশকে নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে জড়িয়ে ছিলেন নগরকেন্দ্রিক অপরাধম‚লক কর্মকান্ড। আছে কয়েকডজন হত্যাকান্ডের অভিযোগ।

এসবের মধ্যে আছে চট্টগ্রাম সিটি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা আশিককে হত্যা, রাউজানের আকবর-মুরাদ হত্যা,বিএনপিকর্মী আজাদ হত্যা, মির্জালেনে ডাবল মার্ডার, তামাকুন্ডী লেনে রাসেল হত্যা, ফরিদ হত্যা। প্রতিটি হত্যাকান্ডের জন্য বাবরকে প্রধান আসামি করে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা আছে। ২০১৩ সালের ২৪ জুন টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে সিআরবিতে বাবর বাহিনীর হাতে শিশু আরমান ও সাজু পালিত নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হন।

ওই দিনদুপুরে সংগঠিত ডাবল মার্ডারের এ ঘটনা দেশজুড়ে আলোচিত হয়। খুনের ঘটনার পর সাজু পালিতের মা থানায় হত্যা মামলা করেন। সেই মামলার আসামি হিসাবে রয়েছে বাবরের নাম। মধ্যপ্রাচ্যের দুবাই কেন্দ্রিক একটি সিন্ডিকেটও পরিচালনা করতেন। তিনি একটি মামলায় চট্টগ্রাম কারাগারে ছিলেন দীর্ঘদিন। ২০১১ সালে জেল থেকে বের হয়ে পাড়ি জমান দুবাইতে। সেখান থেকে দেশে ফেরেন ২০১২ সালে। এরপর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন দলীয় পদ পেতে। ব্যয় করেন প্রচুর টাকাও। এরপর যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যপদ পান।

পদ পাওয়ার পরই রেলের টেন্ডারবাজিতে আরও প্রভাব বিস্তার শুরু করেন।রেলওয়ের অঘোষিত সম্রাট হিসেবে পরিচিত বাবরের মূল অভিভাবক হিসেবে ফজলে করিম চৌধুরীর ছিলেন মর্মে জনশ্রুতি রয়েছে। ফজলে করিম চৌধুরী গত কয়েকটি সংসদে রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ে সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন।জুলাই-আগস্ট হত্যাকান্ডে বাবরের সম্পৃক্ততা।নগরের মুরাদপুর এলাকায় (১৬ জুলাই) গুলিতে ওয়াসিম, ফারুক, শান্ত নামীয় তিনি জন মৃত্যুবরণ করেন। এছাড়া১৮ জুলাই বহদ্দারহাট এলাকায় গুলিতে মৃত্যুবরণ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্রতড়ুয়া, সাইমনমাহিন, তানভীর সিদ্দিকি ও ফজলে রাব্বি। উক্ত ঘটনার একাধিক ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া ব্যাপক সংবাদ প্রচার হয়। প্রকাশ্য দিবালকে ঘটনা সংগঠিত হওয়ায় পথচারি, আন্দোলনকারী, বিভিন্নমিডিয়ার সাংবাদিক পুরো ঘটনার ভিডিও করে। ভিডিওতে দেখা যায়, ১৬ জুলাই পিস্তল হাতে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাবেক উপ-অর্থ সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর। এছাড়া কাটা বন্দুক হাতে ছিলেন যুবলীগ নেতা ফিরোজ। শটগান হাতে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সংগঠক মোঃ দেলোয়ার। পিস্তল হাতে দেখা যায় যুবলীগ কর্মী এন এইচ মিঠু ও মো. জাফর। ১৮ জুলাই পিস্তল হাতে দেখা যায় চান্দগাঁও থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি মহিউদ্দিন ফরহাদ, যুবলীগ কর্মী মোঃ জালাল ওরফে ড্রিল জালাল ও মো. মিজানকে। শটগান হাতে ছিলেন যুবলীগ কর্মী মোঃ তৌহিদ।

এদিকে গত ৪ আগস্ট নগরের নিউমার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগের সংঘর্ষে প্রকাশ্যে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বেশি দেখা যায়। ঐদিন নগরের কোতোয়ালি থানার নিউমার্কেট ও আসকারদিঘির পাড় এলাকায় ১০ জন অস্ত্রধারীকে দেখা গেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিটি কলেজ রোডের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ের পেছন থেকে রিভলবার হাতে গুলি ছোড়েন হেলমেট পরা এক যুবক। তাঁর পাশে থাকা আরেকজন ককটেল নিক্ষেপ করেন। গত ৪ আগস্ট ২০২৪ইং নগরের জামালখান ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের নেতৃত্বে বেলা ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে নগরের আসকারদিঘির পাড় এলাকায় আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দিতে দেখা গেছে। ওই সময় তাঁর পাশে থাকা এক যুবককে শটগান হাতে দেখা যায়।

ভিডিওতে দেখা যায়, কাউন্সিলর ওই যুবককে সামনে এগোতে নির্দেশ দিচ্ছেন। এরপর বেশ কয়েকটি গুলি ছোড়ার শব্দ শোনা যায়। ধাওয়া খেয়ে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে জামালখান ও সার্সন রোডের দিকে চলে যান। শটগান হাতে থাকা যুবকের নাম ফরহাদুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে রিন্টু। রিন্টু ফজলে করিমের অনুসারী ও রাউজানের বাসিন্দা। নগরের লাভলেইন এলাকায় রিন্টু থাকতেন। তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাবেক উপসমাজসেবা সম্পাদক। চট্টগ্রামের স্থানীয় লোকজন জুলাই আগস্ট হত্যাকান্ডে ছাত্রদের বিরুদ্ধে অস্ত্রের ব্যবহারেরবিষয়ে মূলত বাবর বাহিনী জড়িত ছিলো মর্মে জানায়।

উক্ত বাবরের গ্রামের বাড়ি রাউজান। রেলওয়ে ঠিকাধারীতে এককচ্ছত্র নিয়ন্ত্রনে বাবরকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে ফজলে করিম চৌধুরীকে দায়ী করা হয়। উক্ত ঘটনায় রুজুকৃত একাধিক মামলায় ফজলে করিম চৌধুরীকে এজাহারে আসামী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ফজলে করিম গ্রেফতার হওয়ার পর উক্ত মামলা সমূহে গ্রেফতার এবং রিমান্ডে আনা হয়েছে। মামলাগুলি তদন্তাধীন আছে।

কোটা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ২০২৪ ফজলে করিমের ভ‚মিকা:-রাউজানের সংসদ সদস্য হলেও পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক বিভিন্ন কারনে চট্টগ্রাম মহানগরসহ পুরো চট্টগ্রামজেলায় ফজলে করিম চৌধুরীর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনের পর বর্তমানে তিনি এই অঞ্চলের আওয়ামী লীগের অভিভাবক হিসেবে বিবেচিত হন। এছাড়া সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী নিকট-আত্মীয় হওয়ায় চট্টগ্রাম মহানগরে আওয়ামীলীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচনসহ সার্বিকসার্বিক বিষয়ে তিনি অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে ভ‚মিকা পালন করতেন মর্মেজানা যায়। তার পাথরঘাটা বাসভবণ থেকে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করতেন। চট্টগ্রামের শীর্ষস্থানীয় সাংসদ, নেতা-কর্মীরা তার পাথরঘাটা বাসায় নিয়মিত আসা যাওয়া করতেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তার বাসা থেকে তার ছেলে ফারাজ করিমের নেতৃত্বে অস্ত্র সরবরাহ করা হয়। রাউজানের সন্ত্রাসীরা মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, নিউমার্কেট সহ আশেপাশে এলাকায় অস্ত্রসহ ছাত্র-জনতার উপর হামলা করে। তার ও তার ছেলের নেতৃত্বে এ হত্যাকান্ডগুলো পরিচালিত হয়।

চট্টগ্রাম শহরের রাজনীতির মাফিয়া ডন হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর চট্টগ্রামে অন্যতম শীর্ষ অস্ত্রধারী ক্যাডার হিসেবে গত ১৬ বছর বিভিন্ন দপ্তরে ঠিকাধারী নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন। হেলাল আকবর চৌধুরীর সাথে অস্ত্র সরবরাহ কাজে তার বাসায় পরিকল্পনা করে থাকেন।

Share