গাজীপুর: খুন, ছিনতাই আর আতঙ্কের জনপদ - Porikroma News
Connect with us

জাতীয়

গাজীপুর: খুন, ছিনতাই আর আতঙ্কের জনপদ

Published

on

গাজীপুর: খুন, ছিনতাই আর আতঙ্কের জনপদ
সম্প্রতি হানিট্রাপের ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ছবি : ভিডিও থেকে সংগৃহীত

গাজীপুর এখন এক আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়েছে, যেখানে প্রায় প্রতিদিন ঘটছে খুন, ছিনতাই আর চাঁদাবাজির মতো নৃশংস ঘটনা। সম্প্রতি সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার পর এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। গত সাত মাসে গাজীপুরে অন্তত ১০৪টি খুনের ঘটনা ঘটেছে, অর্থাৎ গড়ে প্রায় প্রতিদিন একটি করে হত্যাকাণ্ড হচ্ছে।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতির পেছনে রয়েছে নানা কারণ। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খানের মতে, পুলিশ সদস্যের স্বল্পতা, বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানার কারণে বেকারত্ব বৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা এই অপরাধ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। তিনি বলেন, কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে গেলে অপরাধ বেড়ে যায়, যা জননিরাপত্তার জন্য হুমকি। এছাড়া, পারিবারিক কলহ, পরকীয়া, জমি সংক্রান্ত বিরোধ, ছিনতাই এবং মাদক কারবারকে কেন্দ্র করেও অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটছে।

বিশেষ করে সাংবাদিক এবং সাধারণ মানুষ এখন চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ড ছাড়াও, অটোরিকশা থেকে চাঁদা আদায়ের ভিডিও করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন আরেক সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন। এসব ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গাজীপুরের বিভিন্ন পেশার মানুষ।

ছিনতাইকারীর হাতে প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষও। টঙ্গী অঞ্চলে ছিনতাইয়ের ঘটনায় হতাহত বেড়েছে। সম্প্রতি টঙ্গী ফ্লাইওভারে ছিনতাইকারীর হাতে খুন হন এক যুবক। এছাড়া, কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যও বেড়ে চলেছে। গত মে মাসে কোনাবাড়ির এক বৃদ্ধকে চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তার ওপর হামলা করা হয়, যার ফলে তিনি পরবর্তীতে মারা যান।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বেশিরভাগ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, বড় কোনো ঘটনার পর পুলিশের তৎপরতা দেখা গেলেও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেই, যার কারণে একের পর এক অপরাধ ঘটে চলেছে। অন্যদিকে, সিনিয়র সাংবাদিক শরীফ আহমেদ শামীম মনে করেন, অপরাধীরা দ্রুত জামিনে বেরিয়ে এসে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা এবং পুলিশের তৎপরতা বাড়ানো জরুরি।

গাজীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এপিপি আব্দুল আলীম বলেন, দুর্বল পারিবারিক বন্ধন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সামাজিক অবক্ষয়, স্বার্থপরতা, এবং মাদকাসক্তির মতো কারণে অপরাধ বাড়ছে। এসব মামলার নিষ্পত্তি হতেও সময় লাগছে।

গাজীপুরের মানুষ এখন শান্তিতে থাকতে চান। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে অপরাধমুক্ত একটি শহর ফিরিয়ে আনার জন্য তারা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছেন।

Share

গাজীপুর এখন এক আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়েছে, যেখানে প্রায় প্রতিদিন ঘটছে খুন, ছিনতাই আর চাঁদাবাজির মতো নৃশংস ঘটনা। সম্প্রতি সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার পর এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। গত সাত মাসে গাজীপুরে অন্তত ১০৪টি খুনের ঘটনা ঘটেছে, অর্থাৎ গড়ে প্রায় প্রতিদিন একটি করে হত্যাকাণ্ড হচ্ছে।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতির পেছনে রয়েছে নানা কারণ। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খানের মতে, পুলিশ সদস্যের স্বল্পতা, বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানার কারণে বেকারত্ব বৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা এই অপরাধ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। তিনি বলেন, কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে গেলে অপরাধ বেড়ে যায়, যা জননিরাপত্তার জন্য হুমকি। এছাড়া, পারিবারিক কলহ, পরকীয়া, জমি সংক্রান্ত বিরোধ, ছিনতাই এবং মাদক কারবারকে কেন্দ্র করেও অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটছে।

বিশেষ করে সাংবাদিক এবং সাধারণ মানুষ এখন চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ড ছাড়াও, অটোরিকশা থেকে চাঁদা আদায়ের ভিডিও করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন আরেক সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন। এসব ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গাজীপুরের বিভিন্ন পেশার মানুষ।

ছিনতাইকারীর হাতে প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষও। টঙ্গী অঞ্চলে ছিনতাইয়ের ঘটনায় হতাহত বেড়েছে। সম্প্রতি টঙ্গী ফ্লাইওভারে ছিনতাইকারীর হাতে খুন হন এক যুবক। এছাড়া, কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যও বেড়ে চলেছে। গত মে মাসে কোনাবাড়ির এক বৃদ্ধকে চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তার ওপর হামলা করা হয়, যার ফলে তিনি পরবর্তীতে মারা যান।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বেশিরভাগ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, বড় কোনো ঘটনার পর পুলিশের তৎপরতা দেখা গেলেও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেই, যার কারণে একের পর এক অপরাধ ঘটে চলেছে। অন্যদিকে, সিনিয়র সাংবাদিক শরীফ আহমেদ শামীম মনে করেন, অপরাধীরা দ্রুত জামিনে বেরিয়ে এসে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা এবং পুলিশের তৎপরতা বাড়ানো জরুরি।

গাজীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এপিপি আব্দুল আলীম বলেন, দুর্বল পারিবারিক বন্ধন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সামাজিক অবক্ষয়, স্বার্থপরতা, এবং মাদকাসক্তির মতো কারণে অপরাধ বাড়ছে। এসব মামলার নিষ্পত্তি হতেও সময় লাগছে।

গাজীপুরের মানুষ এখন শান্তিতে থাকতে চান। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে অপরাধমুক্ত একটি শহর ফিরিয়ে আনার জন্য তারা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছেন।

Share