আন্তর্জাতিক
ট্রাম্পের পাকিস্তানপ্রীতি: নতুন কৌশল?

ট্রাম্পের পাকিস্তানপ্রীতি কি নতুন কোনো চাল?
দক্ষিণ এশিয়ার জটিল ভূরাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র বহুদিন ধরেই পাকিস্তানকে কৌশলগত মিত্র হিসেবে বিবেচনা করে এসেছে। স্বাধীনতার পর থেকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি কূটনৈতিকভাবে পাকিস্তানের পাশে থেকেছে ওয়াশিংটন।
তবে গত এক দশকে এই সম্পর্কের উষ্ণতা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। জঙ্গিবাদী কার্যক্রম, চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ও অভ্যন্তরীণ সংকটের কারণে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে দূরে সরিয়ে রেখেছিল।
কিন্তু ২০২৫ সালের মে মাসে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনার সময় মার্কিন মধ্যস্থতায় সংঘাত নিয়ন্ত্রণে এলে আবার আলোচনায় আসে ওয়াশিংটন-ইসলামাবাদ সম্পর্ক। ট্রাম্প প্রশাসনের এই ভূমিকার জন্য পাকিস্তান সরকার তাকে ২০২৬ সালের শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য প্রস্তাবও দেয়। হোয়াইট হাউস এতে ইতিবাচক সাড়া দেয়।
ট্রাম্প এরপর হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজের জন্য পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনীরকে আমন্ত্রণ জানিয়ে সম্পর্কের আরও এক নতুন অধ্যায় রচনা করেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সাত বছর আগেই ট্রাম্প পাকিস্তানকে ‘মিথ্যার ঘাঁটি’ বলেছিলেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এটি কেবল কূটনৈতিক সৌজন্য নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র আবারও পাকিস্তানের গুরুত্ব অনুধাবন করছে।
পাকিস্তানও এই সুযোগে যুক্তরাষ্ট্রকে আকর্ষণীয় প্রস্তাব দিচ্ছে: শুল্কমুক্ত বাণিজ্য, রেয়ার আর্থ মিনারেল সরবরাহ, ব্লকচেইন ও ক্রিপ্টো বিনিয়োগে মার্কিন অংশীদারিত্বের সুযোগ।
সম্প্রতি উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের মার্কিন সফর এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে বৈঠকেও এই সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
সব মিলিয়ে প্রশ্ন উঠেছে—এ কি শুধুই সৌজন্যমূলক সম্পর্ক পুনর্গঠন, নাকি দক্ষিণ এশিয়ার নতুন কৌশলে পাকিস্তানকে ঘিরেই চীনকে চাপে ফেলতে চাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন? সময়ই দেবে এর উত্তর। তবে নিশ্চিত হওয়া যায়, ওয়াশিংটন আবারও ইসলামাবাদের কাঁধে হাত রাখছে।