রূপপুরে দাবি আদায়ে মিছিল, নিরাপত্তা হুমকিতে - Porikroma News
Connect with us

বাংলাদেশ

রূপপুরে দাবি আদায়ে মিছিল, নিরাপত্তা হুমকিতে

Published

on

রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প এলাকার ভেতরে মিছিল-মিটিং-বিক্ষোভ-সমাবেশ-মানববন্ধন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং এসব কর্মকাণ্ড কোনোক্রমেই করা উচিত হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়ার অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম।

গত কয়েকদিন ধরে প্রকল্প এলাকায় এনপিসিবিএল এর কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলন প্রসঙ্গ তিনি একথা বলেন।

ড.শফিকুল আরও বলেন, ‘চরম স্পর্শকাতর ও নিরাপত্তা বেষ্টিত নিউক্লিয়ার প্লান্ট এলাকায় এধরনের কর্মসূচি পালনের নজির বিশ্বে কোথাও নেই। এ ধরনের কালচার এখানে শুরু হলে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানো বিপজ্জনক হয়ে যাবে। সেফটি কালচার, সিকিউরিটি কালচার, কোড অব কন্ট্রাক্ট সবকিছু মেনে চলতে হবে। আন্দোলনরতদের সঙ্গে যদি কোনো বৈষম্য হয়ে থাকে সেটারও নিরসন করতে হবে। তাদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো পূরণের জন্য ম্যানেজমেন্টকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের স্বার্থে তাদের বোঝানো, শেখানোসহ সেফটি বিষয়ে মোটিভেশন করা দরকার। সুন্দর পরিবেশ তৈরি করা না গেলে এটা চালানো খুব কঠিন হবে।’ 

তিনি বলেন, ‘প্রকল্পে যেসব ঘটনা ঘটছে তা খুবই দুঃখজনক এবং এসব দেখে কষ্ট পাচ্ছি। পারমাণবিক কেন্দ্র শান্তিপূর্ণভাবে চালানোর ক্ষেত্রে এধরনের কর্মকাণ্ড অন্তরায়।’ 

ম্যানেজমেন্টের যদি কোনো সমস্যা থাকে তাহলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে নজর দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য তিনি আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশ কয়েকদিন ধরে প্রকল্প এলাকায় আন্দোলনে নেমেছেন। ২৮ এপ্রিল থেকে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চলছে। প্রকল্প এলাকা ছাড়াও গত ৬ মে বিকেল এনপিসিবিএলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থল ত্যাগ করে উপজেলা সদরে মানববন্ধন করেন। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে তারা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জ্যেষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক ফাহিম শাহরিয়ার। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রায় এক দশক আগে এনপিসিবিএল গঠিত হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনো সার্ভিস রুল প্রকাশ হয়নি। কোনো অর্গানোগ্রাম নেই। দায়িত্বের সুস্পষ্ট বণ্টন, পদোন্নতি নেই। বেতনবৈষম্য ও সুযোগ-সুবিধা থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীর ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়েছে।
শৌচাগার, স্বাস্থ্য ও মানবিক সুব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হয়নি। এতে করে কর্মীরা প্রতিদিন দুর্ভোগের মধ্যে দায়িত্ব পালন করছেন। বিশেষ করে নারী শ্রমিকেরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার। আন্দোলনকারীরা এসময় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক এবং নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জাহেদুল হাছানের অপসারণ দাবি করেন।

মঙ্গলবার (৬ মে) রাতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে এনপিসিবিএলের সচিব এস আব্দুর রশিদ স্বাক্ষরিত এক ই-মেইলে বলা হয়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র একটি ‘১ক’ শ্রেণিভুক্ত কেপিআই (গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা)। তাই প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রকল্প এলাকা বা সংশ্লিষ্ট স্থাপনায় সকল প্রকার শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে এবং যাতে কোনো প্রকার শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকান্ড সংঘটিত না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক, সচেতন থাকতে হবে। তবে এই নোটিশ পাওয়ার পরও বুধবার ও বৃহস্পতিবার প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রকল্পের জনৈক সিনিয়র কর্মকর্তা স্পর্শকাতর প্রকল্প এলাকায় এধরনের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত জানিয়ে বলেন, ‘গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির শ্রমিকদের মতো মিছিল-মিটিং হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি এবং গ্রীডলাইন প্রস্তুত না হওয়ায় এমনিতেই প্রকল্প চালু করে গ্রিডলাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ অনেক পিছিয়েছে। দ্রুত প্লান্ট নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য আপ্রাণ প্রচেষ্টা চলছে। যেকারণে অনেক সুযোগ-সুবিধার দিকে কর্তৃপক্ষ নজর দিতে পারেননি। ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রসংগে তিনি বলেন, এমডি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের শুরু থেকেই কোম্পানির উন্নয়নে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। স্বল্প সময়ে কোম্পানির সার্বিক কাঠামোগত উন্নয়ন ও প্রশাসনিক সংস্কারে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। প্রতি সপ্তাহেই ঢাকা থেকে আসেন। আবার ঢাকায় ফিরে অফিস করেন। প্রকল্পের সব টেকনিক্যাল কাজ তিনি খুটিয়ে খুটিয়ে দেখেন। সময়মতো কাজ শেষ না হলে এবং ভুলত্রুটি হলে বকাঝকাও করেন। যেকারণে অনেকের মধ্যে হয়ত ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।’

ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. জাহিদুল হাসান আন্দোলন প্রসঙ্গে বলেন, ‘পরমাণু নিরাপত্তার পরিপন্থি, ব্যক্তি আক্রোশপ্রসূত এবং পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ। মাত্র চার মাস ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব নিয়েছি। এরমধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রমোশন, বাড়িভাড়া বৃদ্ধি, গ্রেড বৃদ্ধি, সার্ভিস রুলসহ নানা দাবি তুলেছেন।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা কনস্ট্রাকশন প্লান্টে কাজ করি। সব দাবি-দাওয়া এককভাবে বাস্তবায়নযোগ্য নয়। এগুলো সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত সাপেক্ষ বিষয়। এনবিপিসিএল নতুন কোম্পানি হওয়ায় এবং দেশে পারমানবিক স্থাপনা না থাকায়, সার্ভিস রুলসের মত বিষয়গুলো সমাধানে জটিলতা তৈরি হয়, তাই বিলম্বিত হয়েছে। দায়িত্ব পাওয়ার পর অফিসের বসার স্থান সংকট, নামাজের জায়গা, নতুন কম্পিউটার ক্রয়, এবং নিরাপত্তা সরঞ্জাম সংক্রান্ত টেন্ডার প্রক্রিয়াসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। অথচ আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত। প্রজেক্টটি শেষের পথে এবং শিগগিরই উৎপাদনে যাবে জানিয়ে বলেন, উৎপাদনে যাওয়ার আগেই কন্ট্রাক্টর বসার জায়গা এবং সংশ্লিষ্ট সকল সুবিধা দেবে।’


চলতি মে মাসেই তিনি অবসরে যাচ্ছেন জানিয়ে বলেন, ‘এটি আমার পেশাগত সুনাম ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। রূপপুর প্রকল্প একটি জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত মেগা প্রজেক্ট। এমন একটি প্রকল্পে ব্যক্তিগত আক্রোশ, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত বিভ্রান্তি ছড়ানো শুধু প্রকল্প নয়, বরং দেশের পরমাণু নিরাপত্তা ও উন্নয়ন প্রচেষ্টার জন্যও হুমকিস্বরূপ।’

Share

রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প এলাকার ভেতরে মিছিল-মিটিং-বিক্ষোভ-সমাবেশ-মানববন্ধন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং এসব কর্মকাণ্ড কোনোক্রমেই করা উচিত হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়ার অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম।

গত কয়েকদিন ধরে প্রকল্প এলাকায় এনপিসিবিএল এর কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলন প্রসঙ্গ তিনি একথা বলেন।

ড.শফিকুল আরও বলেন, ‘চরম স্পর্শকাতর ও নিরাপত্তা বেষ্টিত নিউক্লিয়ার প্লান্ট এলাকায় এধরনের কর্মসূচি পালনের নজির বিশ্বে কোথাও নেই। এ ধরনের কালচার এখানে শুরু হলে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানো বিপজ্জনক হয়ে যাবে। সেফটি কালচার, সিকিউরিটি কালচার, কোড অব কন্ট্রাক্ট সবকিছু মেনে চলতে হবে। আন্দোলনরতদের সঙ্গে যদি কোনো বৈষম্য হয়ে থাকে সেটারও নিরসন করতে হবে। তাদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো পূরণের জন্য ম্যানেজমেন্টকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের স্বার্থে তাদের বোঝানো, শেখানোসহ সেফটি বিষয়ে মোটিভেশন করা দরকার। সুন্দর পরিবেশ তৈরি করা না গেলে এটা চালানো খুব কঠিন হবে।’ 

তিনি বলেন, ‘প্রকল্পে যেসব ঘটনা ঘটছে তা খুবই দুঃখজনক এবং এসব দেখে কষ্ট পাচ্ছি। পারমাণবিক কেন্দ্র শান্তিপূর্ণভাবে চালানোর ক্ষেত্রে এধরনের কর্মকাণ্ড অন্তরায়।’ 

ম্যানেজমেন্টের যদি কোনো সমস্যা থাকে তাহলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে নজর দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য তিনি আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশ কয়েকদিন ধরে প্রকল্প এলাকায় আন্দোলনে নেমেছেন। ২৮ এপ্রিল থেকে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চলছে। প্রকল্প এলাকা ছাড়াও গত ৬ মে বিকেল এনপিসিবিএলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থল ত্যাগ করে উপজেলা সদরে মানববন্ধন করেন। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে তারা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জ্যেষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক ফাহিম শাহরিয়ার। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রায় এক দশক আগে এনপিসিবিএল গঠিত হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনো সার্ভিস রুল প্রকাশ হয়নি। কোনো অর্গানোগ্রাম নেই। দায়িত্বের সুস্পষ্ট বণ্টন, পদোন্নতি নেই। বেতনবৈষম্য ও সুযোগ-সুবিধা থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীর ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়েছে।
শৌচাগার, স্বাস্থ্য ও মানবিক সুব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হয়নি। এতে করে কর্মীরা প্রতিদিন দুর্ভোগের মধ্যে দায়িত্ব পালন করছেন। বিশেষ করে নারী শ্রমিকেরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার। আন্দোলনকারীরা এসময় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক এবং নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জাহেদুল হাছানের অপসারণ দাবি করেন।

মঙ্গলবার (৬ মে) রাতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে এনপিসিবিএলের সচিব এস আব্দুর রশিদ স্বাক্ষরিত এক ই-মেইলে বলা হয়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র একটি ‘১ক’ শ্রেণিভুক্ত কেপিআই (গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা)। তাই প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রকল্প এলাকা বা সংশ্লিষ্ট স্থাপনায় সকল প্রকার শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে এবং যাতে কোনো প্রকার শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকান্ড সংঘটিত না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক, সচেতন থাকতে হবে। তবে এই নোটিশ পাওয়ার পরও বুধবার ও বৃহস্পতিবার প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রকল্পের জনৈক সিনিয়র কর্মকর্তা স্পর্শকাতর প্রকল্প এলাকায় এধরনের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত জানিয়ে বলেন, ‘গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির শ্রমিকদের মতো মিছিল-মিটিং হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি এবং গ্রীডলাইন প্রস্তুত না হওয়ায় এমনিতেই প্রকল্প চালু করে গ্রিডলাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ অনেক পিছিয়েছে। দ্রুত প্লান্ট নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য আপ্রাণ প্রচেষ্টা চলছে। যেকারণে অনেক সুযোগ-সুবিধার দিকে কর্তৃপক্ষ নজর দিতে পারেননি। ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রসংগে তিনি বলেন, এমডি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের শুরু থেকেই কোম্পানির উন্নয়নে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। স্বল্প সময়ে কোম্পানির সার্বিক কাঠামোগত উন্নয়ন ও প্রশাসনিক সংস্কারে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। প্রতি সপ্তাহেই ঢাকা থেকে আসেন। আবার ঢাকায় ফিরে অফিস করেন। প্রকল্পের সব টেকনিক্যাল কাজ তিনি খুটিয়ে খুটিয়ে দেখেন। সময়মতো কাজ শেষ না হলে এবং ভুলত্রুটি হলে বকাঝকাও করেন। যেকারণে অনেকের মধ্যে হয়ত ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।’

ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. জাহিদুল হাসান আন্দোলন প্রসঙ্গে বলেন, ‘পরমাণু নিরাপত্তার পরিপন্থি, ব্যক্তি আক্রোশপ্রসূত এবং পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ। মাত্র চার মাস ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব নিয়েছি। এরমধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রমোশন, বাড়িভাড়া বৃদ্ধি, গ্রেড বৃদ্ধি, সার্ভিস রুলসহ নানা দাবি তুলেছেন।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা কনস্ট্রাকশন প্লান্টে কাজ করি। সব দাবি-দাওয়া এককভাবে বাস্তবায়নযোগ্য নয়। এগুলো সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত সাপেক্ষ বিষয়। এনবিপিসিএল নতুন কোম্পানি হওয়ায় এবং দেশে পারমানবিক স্থাপনা না থাকায়, সার্ভিস রুলসের মত বিষয়গুলো সমাধানে জটিলতা তৈরি হয়, তাই বিলম্বিত হয়েছে। দায়িত্ব পাওয়ার পর অফিসের বসার স্থান সংকট, নামাজের জায়গা, নতুন কম্পিউটার ক্রয়, এবং নিরাপত্তা সরঞ্জাম সংক্রান্ত টেন্ডার প্রক্রিয়াসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। অথচ আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত। প্রজেক্টটি শেষের পথে এবং শিগগিরই উৎপাদনে যাবে জানিয়ে বলেন, উৎপাদনে যাওয়ার আগেই কন্ট্রাক্টর বসার জায়গা এবং সংশ্লিষ্ট সকল সুবিধা দেবে।’


চলতি মে মাসেই তিনি অবসরে যাচ্ছেন জানিয়ে বলেন, ‘এটি আমার পেশাগত সুনাম ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। রূপপুর প্রকল্প একটি জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত মেগা প্রজেক্ট। এমন একটি প্রকল্পে ব্যক্তিগত আক্রোশ, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত বিভ্রান্তি ছড়ানো শুধু প্রকল্প নয়, বরং দেশের পরমাণু নিরাপত্তা ও উন্নয়ন প্রচেষ্টার জন্যও হুমকিস্বরূপ।’

Share