মিটফোর্ডে প্রকাশ্যে হত্যা: চার দিনের রিমান্ডে দুই ঘাতক, ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি ইতিমধ্যে ৯ জনের - Porikroma News
Connect with us

অপরাধ

মিটফোর্ডে প্রকাশ্যে হত্যা: চার দিনের রিমান্ডে দুই ঘাতক, ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি ইতিমধ্যে ৯ জনের

Published

on

পরিক্রমা ডেস্কঃ রাজধানীর জনবহুল এলাকা মিটফোর্ড হাসপাতালে দিনের আলোয় প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও পাথর ছুড়ে হত্যা করা ভাঙারি পণ্য ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ হত্যাকাণ্ডে এবার নতুন দুই আসামির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে ১৪ জন, যার মধ্যে ৯ জন ইতোমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

আজ শনিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে রুমান বেপারী (৩২) ও মো. আবির হোসেন (২৮) নামের দুই আসামিকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। তবে শুনানি শেষে আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রুমান ও আবিরকে গতকাল কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন দুইজনই লাল চাঁদকে ঘিরে ধরার মূল পরিকল্পনাকারী এবং হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য অনুযায়ী, লাল চাঁদকে প্রথমে ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে একদল লোক। এরপর একে একে পাথর, ইট ও লাঠির আঘাতে মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়। পরে মৃতপ্রায় অবস্থায় তাকে বিবস্ত্র করে তার শরীরের ওপর উঠে লাফিয়ে হত্যার ভয়াবহ চিত্র উপস্থাপন করে ঘাতকরা। পুরো ঘটনা চলেছে ৫-৬ মিনিট, অথচ আশেপাশে ছিল শত শত মানুষ কেউ থামাতে এগিয়ে আসেনি।

লোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডের পরদিনই কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। পুলিশের তদন্তে উঠে আসে এলাকায় আধিপত্য, চাঁদাবাজি ও ব্যক্তিগত শত্রুতার জটিল সুতোর ছায়া। মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে সিআইডি, যারা দ্রুত একাধিক অভিযানে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে এবং ইতোমধ্যে ৯ জন আসামি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে।

আইনজীবীরা বলছেন, এত বড় হত্যাকাণ্ডে যদি মামলার বিচার প্রক্রিয়া সঠিক ও দ্রুত হয়, তবে তা হবে দৃষ্টান্তমূলক। তবে তারা এটাও সতর্ক করে দিচ্ছেন রিমান্ডে স্বীকারোক্তি আদায় যেন জবরদস্তি না হয় এবং তদন্ত যেন পক্ষপাতহীন থাকে।

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এই হত্যাকাণ্ড শুধু এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধ নয়, এটি রাষ্ট্রীয় নিষ্ক্রিয়তার ফল। তারা প্রশ্ন তুলছেন, দিনের আলোয় শত মানুষের সামনে একজন মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা হলো, পুলিশ বা নিরাপত্তা বাহিনী কোথায় ছিল?

এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন সাধারণ নাগরিকরাও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ ঝাড়ছেন বহু মানুষ। কেউ লিখেছেন, “এই যদি রাজধানীর চিত্র হয়, তাহলে দেশের প্রান্তিক এলাকায় নিরাপত্তার আশা করা অর্থহীন।”

এখন সবার চোখ রিমান্ডে থাকা দুই আসামির জবানবন্দি, নতুন গ্রেপ্তার ও চার্জশিট দাখিলের দিকে। বিচার বিভাগ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং সরকার তিন পক্ষই যদি এই হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সেটি হবে নাগরিক নিরাপত্তার প্রতি আরেকটি বিশাল আঘাত।

Share

পরিক্রমা ডেস্কঃ রাজধানীর জনবহুল এলাকা মিটফোর্ড হাসপাতালে দিনের আলোয় প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও পাথর ছুড়ে হত্যা করা ভাঙারি পণ্য ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ হত্যাকাণ্ডে এবার নতুন দুই আসামির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে ১৪ জন, যার মধ্যে ৯ জন ইতোমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

আজ শনিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে রুমান বেপারী (৩২) ও মো. আবির হোসেন (২৮) নামের দুই আসামিকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। তবে শুনানি শেষে আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রুমান ও আবিরকে গতকাল কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন দুইজনই লাল চাঁদকে ঘিরে ধরার মূল পরিকল্পনাকারী এবং হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য অনুযায়ী, লাল চাঁদকে প্রথমে ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে একদল লোক। এরপর একে একে পাথর, ইট ও লাঠির আঘাতে মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়। পরে মৃতপ্রায় অবস্থায় তাকে বিবস্ত্র করে তার শরীরের ওপর উঠে লাফিয়ে হত্যার ভয়াবহ চিত্র উপস্থাপন করে ঘাতকরা। পুরো ঘটনা চলেছে ৫-৬ মিনিট, অথচ আশেপাশে ছিল শত শত মানুষ কেউ থামাতে এগিয়ে আসেনি।

লোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডের পরদিনই কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। পুলিশের তদন্তে উঠে আসে এলাকায় আধিপত্য, চাঁদাবাজি ও ব্যক্তিগত শত্রুতার জটিল সুতোর ছায়া। মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে সিআইডি, যারা দ্রুত একাধিক অভিযানে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে এবং ইতোমধ্যে ৯ জন আসামি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে।

আইনজীবীরা বলছেন, এত বড় হত্যাকাণ্ডে যদি মামলার বিচার প্রক্রিয়া সঠিক ও দ্রুত হয়, তবে তা হবে দৃষ্টান্তমূলক। তবে তারা এটাও সতর্ক করে দিচ্ছেন রিমান্ডে স্বীকারোক্তি আদায় যেন জবরদস্তি না হয় এবং তদন্ত যেন পক্ষপাতহীন থাকে।

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এই হত্যাকাণ্ড শুধু এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধ নয়, এটি রাষ্ট্রীয় নিষ্ক্রিয়তার ফল। তারা প্রশ্ন তুলছেন, দিনের আলোয় শত মানুষের সামনে একজন মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা হলো, পুলিশ বা নিরাপত্তা বাহিনী কোথায় ছিল?

এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন সাধারণ নাগরিকরাও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ ঝাড়ছেন বহু মানুষ। কেউ লিখেছেন, “এই যদি রাজধানীর চিত্র হয়, তাহলে দেশের প্রান্তিক এলাকায় নিরাপত্তার আশা করা অর্থহীন।”

এখন সবার চোখ রিমান্ডে থাকা দুই আসামির জবানবন্দি, নতুন গ্রেপ্তার ও চার্জশিট দাখিলের দিকে। বিচার বিভাগ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং সরকার তিন পক্ষই যদি এই হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সেটি হবে নাগরিক নিরাপত্তার প্রতি আরেকটি বিশাল আঘাত।

Share