আন্তর্জাতিক
গাজায় দুর্ভিক্ষের পর রিফিডিং সিন্ড্রোমে মৃত্যুঝুঁকি

ইসরায়েল ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় অবরোধ ও সহিংসতার মাধ্যমে মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দিয়েছে। ২০২৫ সালের মার্চের পর এই অবরোধ আরও কঠোর হয়, ফলে খাদ্য সহায়তা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ইতোমধ্যেই শত শত মানুষ পুরুষ, নারী ও শিশু তীব্র অপুষ্টিতে মারা গেছে। চিকিৎসকেরা প্রতিদিন অল্প কিছু রুটি ও তেলের ওপর বেঁচে আছেন, এমনকি লবণ ও ইলেক্ট্রোলাইটের জন্য সমুদ্রের পানি পান করছেন। সাংবাদিকেরা কাজ করার মতো শক্তি হারাচ্ছেন, আর পুরুষেরা এতটাই দুর্বল যে সহায়তা সংগ্রহে যেতে পারছেন না।
দুর্ভিক্ষে মানুষের দেহ ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ে, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দেয় এবং শরীর নিজের পেশি ও চর্বি খেয়ে ফেলতে শুরু করে। ইতিহাসে বহুবার এ ধরনের দৃশ্য দেখা গেছে রোমানদের অবরোধে ৭০ খ্রিস্টাব্দের জেরুজালেম, সোভিয়েত ইউনিয়নের দুর্ভিক্ষ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানি যুদ্ধবন্দীদের মুক্তির সময়। একটি বড় বিপদ হলো রিফিডিং সিন্ড্রোম অর্থাৎ দীর্ঘদিন অনাহারে থাকার পর হঠাৎ খাবার খাওয়া শুরু করলে মারাত্মক বিপজ্জনক মেটাবলিক শক হয়, যা হৃদযন্ত্র, ফুসফুস ও স্নায়ুকে ধ্বংস করে মৃত্যু ঘটাতে পারে।
গাজার মতো ধ্বংসপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যব্যবস্থায় এই রোগ মোকাবিলা প্রায় অসম্ভব। অ্যানেসথেশিয়া নেই, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব চরম পর্যায়ে, ডাক্তাররা শুধুমাত্র জরুরি রোগী দেখছেন। ফলে আন্তর্জাতিক চাপ দিয়ে অবিলম্বে চিকিৎসা সরঞ্জাম, বিশেষজ্ঞ দল ও ল্যাব সুবিধা গাজায় প্রবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। অন্যথায় খাদ্য সহায়তা পৌঁছালেও হাজারো মানুষ রিফিডিং সিন্ড্রোমে মারা যেতে পারে।