আন্তঃদলীয় বাধা ও বিভাজনে থমকে গেল আমূল পরিবর্তন, তবে জুলাই সনদের দ্বারপ্রান্তে অন্তর্বর্তী সরকার - Porikroma News
Connect with us

জাতীয়

আন্তঃদলীয় বাধা ও বিভাজনে থমকে গেল আমূল পরিবর্তন, তবে জুলাই সনদের দ্বারপ্রান্তে অন্তর্বর্তী সরকার

Published

on

পরিক্রমা নিউজ ডেস্ক: রাজনৈতিক প্রতিরোধ, অন্তঃশক্তির দ্বন্দ্ব এবং এক-এগারোর ছায়া সবমিলিয়ে কাঙ্ক্ষিত আমূল পরিবর্তনের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাষ্ট্র ও রাজনীতির পুরনো মোড়লচক্র। আজ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ আয়োজিত সেমিনারে এভাবেই অন্তর্বর্তী সরকারের সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাবনার বিপ্লবী খতিয়ান তুলে ধরেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।

তিনি বলেন, “একটি সফল গণ-অভ্যুত্থানের পরেও আমরা জনগণকে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের রূপরেখা দিতে পারিনি এটা আমাদের দায়। অথচ সেই রূপরেখা অর্থাৎ ‘জুলাই সনদ’ আজ বাস্তবের দ্বারপ্রান্তে।” তিনি জানান, ৫ আগস্ট সেই সনদ ঘোষণা করা হবে এবং ৮ আগস্টের মধ্যে সেটিকে সাংবিধানিক রূপ দিতে ঐকমত্যের পথে অগ্রসর হচ্ছে রাজনৈতিক শক্তিগুলো।

আসিফ মাহমুদ বলেন, “সামরিক শাসনের পুরনো অভিজ্ঞতার কারণে সরাসরি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা কেউ করতে পারেনি, তবে নানা রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে আমাদের সরকারকে অথরিটারিয়ান হিসেবে গড়ে তুলতে তৎপরতা হয়েছে, এবং কিছু ক্ষেত্রে তারা সফলও হয়েছে।”

এই প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বড় অন্তরায় হয়েছে গণ-অভ্যুত্থান থেকে জন্ম নেওয়া শক্তিগুলোর বিভাজন। তাঁর ভাষায়, “আমরা যে ড্রাস্টিক চেঞ্জ চেয়েছিলাম, সেটা সম্ভব হয়নি। এই বিভক্তি আমাদের থামিয়েছে, কিন্তু থামিয়ে দিতে পারেনি।”

ঘোষণাপত্র ও সাংবিধানিক ঐকমত্য:
“আমরা ঘোষণা দিতে পারিনি তখন, কিন্তু আজ তার প্রস্তুতি সম্পন্ন। রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ঐকমত্যে এসেছে। কেউ বলছে গণভোট, কেউ বলছে সাংবিধানিক কাউন্সিল। কিন্তু একজায়গায় সবাই একমত পরিবর্তন আসবেই।”

উপদেষ্টা আশাবাদ জানিয়ে বলেন, “আজ আমাদের তরুণরা সচেতন। তারা আর নির্ভর করে না কেবল কোনো নেতার সদিচ্ছার ওপর। এই জনগোষ্ঠীই বাস্তবিক অর্থে ক্ষমতা ধারণ করছে।” তাঁর মতে, এই রাজনৈতিক বোধই জুলাই অভ্যুত্থানের সবচেয়ে বড় অর্জন।

প্রথম প্যানেল: গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্ররাজনীতি: সংকট ও সম্ভাবনা

দ্বিতীয় প্যানেল: ইন্টেরিম, গণকবরে কারা?

তৃতীয় প্যানেল: সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন: কোন পথে বাংলাদেশ?

চতুর্থ প্যানেল: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির খতিয়ান

পঞ্চম প্যানেল: অভ্যুত্থান-পরবর্তী সাংস্কৃতিক রাজনীতি

এগুলোতে বক্তৃতা করেন আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী ছাত্রনেতা, রাজনীতিবিদ, শহীদ পরিবার, কবি, সাংবাদিক ও লেখকরা।

একসময় যে ঘোষণাপত্র লেখা হয়নি বলেই রাষ্ট্র দাঁড়াতে পারেনি নিজের মেরুদণ্ডে আজ সেই ঘোষণার অপেক্ষায় সারা জাতি। ৫ আগস্ট হতে যাচ্ছে ‘নতুন রাষ্ট্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন’। অন্তর্বর্তী সরকার যদি একে বাস্তবায়নে সক্ষম হয়, তবে একে আর কেবল সরকার বলা যাবে না তাকে ইতিহাস বলবে ‘দ্বিতীয় জন্মদাতা’।

সংগ্রাম চলছে, চূড়ান্ত মুহূর্ত ঘনিয়ে আসছে। জুলাই শুধু অতীত নয়, সে এখন ভবিষ্যতের নাম।

Share

পরিক্রমা নিউজ ডেস্ক: রাজনৈতিক প্রতিরোধ, অন্তঃশক্তির দ্বন্দ্ব এবং এক-এগারোর ছায়া সবমিলিয়ে কাঙ্ক্ষিত আমূল পরিবর্তনের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাষ্ট্র ও রাজনীতির পুরনো মোড়লচক্র। আজ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ আয়োজিত সেমিনারে এভাবেই অন্তর্বর্তী সরকারের সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাবনার বিপ্লবী খতিয়ান তুলে ধরেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।

তিনি বলেন, “একটি সফল গণ-অভ্যুত্থানের পরেও আমরা জনগণকে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের রূপরেখা দিতে পারিনি এটা আমাদের দায়। অথচ সেই রূপরেখা অর্থাৎ ‘জুলাই সনদ’ আজ বাস্তবের দ্বারপ্রান্তে।” তিনি জানান, ৫ আগস্ট সেই সনদ ঘোষণা করা হবে এবং ৮ আগস্টের মধ্যে সেটিকে সাংবিধানিক রূপ দিতে ঐকমত্যের পথে অগ্রসর হচ্ছে রাজনৈতিক শক্তিগুলো।

আসিফ মাহমুদ বলেন, “সামরিক শাসনের পুরনো অভিজ্ঞতার কারণে সরাসরি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা কেউ করতে পারেনি, তবে নানা রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে আমাদের সরকারকে অথরিটারিয়ান হিসেবে গড়ে তুলতে তৎপরতা হয়েছে, এবং কিছু ক্ষেত্রে তারা সফলও হয়েছে।”

এই প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বড় অন্তরায় হয়েছে গণ-অভ্যুত্থান থেকে জন্ম নেওয়া শক্তিগুলোর বিভাজন। তাঁর ভাষায়, “আমরা যে ড্রাস্টিক চেঞ্জ চেয়েছিলাম, সেটা সম্ভব হয়নি। এই বিভক্তি আমাদের থামিয়েছে, কিন্তু থামিয়ে দিতে পারেনি।”

ঘোষণাপত্র ও সাংবিধানিক ঐকমত্য:
“আমরা ঘোষণা দিতে পারিনি তখন, কিন্তু আজ তার প্রস্তুতি সম্পন্ন। রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ঐকমত্যে এসেছে। কেউ বলছে গণভোট, কেউ বলছে সাংবিধানিক কাউন্সিল। কিন্তু একজায়গায় সবাই একমত পরিবর্তন আসবেই।”

উপদেষ্টা আশাবাদ জানিয়ে বলেন, “আজ আমাদের তরুণরা সচেতন। তারা আর নির্ভর করে না কেবল কোনো নেতার সদিচ্ছার ওপর। এই জনগোষ্ঠীই বাস্তবিক অর্থে ক্ষমতা ধারণ করছে।” তাঁর মতে, এই রাজনৈতিক বোধই জুলাই অভ্যুত্থানের সবচেয়ে বড় অর্জন।

প্রথম প্যানেল: গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্ররাজনীতি: সংকট ও সম্ভাবনা

দ্বিতীয় প্যানেল: ইন্টেরিম, গণকবরে কারা?

তৃতীয় প্যানেল: সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন: কোন পথে বাংলাদেশ?

চতুর্থ প্যানেল: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির খতিয়ান

পঞ্চম প্যানেল: অভ্যুত্থান-পরবর্তী সাংস্কৃতিক রাজনীতি

এগুলোতে বক্তৃতা করেন আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী ছাত্রনেতা, রাজনীতিবিদ, শহীদ পরিবার, কবি, সাংবাদিক ও লেখকরা।

একসময় যে ঘোষণাপত্র লেখা হয়নি বলেই রাষ্ট্র দাঁড়াতে পারেনি নিজের মেরুদণ্ডে আজ সেই ঘোষণার অপেক্ষায় সারা জাতি। ৫ আগস্ট হতে যাচ্ছে ‘নতুন রাষ্ট্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন’। অন্তর্বর্তী সরকার যদি একে বাস্তবায়নে সক্ষম হয়, তবে একে আর কেবল সরকার বলা যাবে না তাকে ইতিহাস বলবে ‘দ্বিতীয় জন্মদাতা’।

সংগ্রাম চলছে, চূড়ান্ত মুহূর্ত ঘনিয়ে আসছে। জুলাই শুধু অতীত নয়, সে এখন ভবিষ্যতের নাম।

Share